ঢাকা , রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫ , ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ট্রেনের টিকিট বিক্রির নামে প্রতারণা নানা হিসাব-নিকাশে অন্তর্বর্তী সরকার দেড় মাসেও সন্ধান মেলেনি সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া ১৮ জেলের জীবনযাত্রায় ভয়ানক চাপ নদী বাঁচলে পরিবেশও টিকে থাকবে -পরিবেশ উপদেষ্টা সচিবালয়ের ভবনগুলোতে পরিত্যক্ত মালামাল অপসারণের অনুরোধ চলন্ত অটোরিকশার পেছনে ঝুলে থাকা ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতের চেষ্টা, ভিডিও ভাইরাল গ্রেফতার বাবাকে ধরে কাঁদতে থাকা শিশুকে চড় খতিয়ে দেখছে পুলিশ নোয়াখালীতে ট্রলারবোঝাই ইউরিয়া সার জব্দ ঘরে ৩ বস্তা টাকা জমানো সেই ভিখারির মৃত্যু ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব নয়’ মায়ের দাফন নিয়ে দুই গ্রুপে সংঘর্ষে নিহত ১ তিন শতাধিক পুলিশ সদস্যকে ব্রেস্ট ক্যান্সার বিষয়ে প্রশিক্ষণ সরকারে প্রশ্নবিদ্ধ ব্যক্তিরা থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়-আমীর খসরু বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষা খাতকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে-তারেক রহমান গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় রাজনৈতিক সদিচ্ছা জরুরি-শিরীন পারভিন বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরছে প্রতারণার শিকার কর্মীরা ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫ চেয়ারম্যানের ছেলেসহ হ্যাকার চক্রের তিন সদস্য গ্রেফতার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ভবদহে খনন শুরু

মায়ের দাফন নিয়ে দুই গ্রুপে সংঘর্ষে নিহত ১

  • আপলোড সময় : ২৫-১০-২০২৫ ০৯:৪৬:৪০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৫-১০-২০২৫ ০৯:৪৬:৪০ অপরাহ্ন
মায়ের দাফন নিয়ে দুই গ্রুপে সংঘর্ষে নিহত ১
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুরে বিরোধের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ চলাকালে দুই পক্ষের কমপক্ষে ১০টি বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়। এখনও এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গ্রামের বিবদমান দুই গ্রুপ সাচ্চু এবং হারুন পক্ষের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এই বিরোধে যুক্ত হয় গ্রামের হাসিম মিয়ার পরিবার। গ্রাম্য দলাদলিতে হাসিমের ছয় ছেলে দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এর মধ্যে ৪ ছেলে- নোয়াব মিয়া, আব্দুল হক মিয়া, ফজলুল হক মিয়া ও শহীদুল হক মিয়া সাবেক চেয়ারম্যান হারুনের পক্ষের ১১টি গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হন। অন্যদিকে অপর দুই সন্তান- জহিরুল হক ও নুরুল হক গ্রামের অপর পক্ষ শাবত আলীর গোষ্ঠীর সাচ্চুর মিয়ার পক্ষে অবস্থান নেন। এর মধ্যে গত শুক্রবার রাতে আব্দুল হাসিম মিয়ার স্ত্রী শতবর্ষী বৃদ্ধা মোসামাৎ বিবি বেগম মারা যান। এর আগে বিবি বেগম ছোট ছেলে নুরুল হকের পরিবারের সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করতেন। নুরুল হক কুমিল্লায় বেকারি ব্যবসা করেন।
মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে নুরুল হক কুমিল্লা থেকে নিজ বাড়ির উদ্দেশে ভোরে রওনা হন। কিন্ত তিনি কুমিল্লা থেকে বাড়িতে আসার আগেই হারুনপন্থি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত চার ভাই তাদের মায়ের দাফন সম্পন্ন করেন। পরে নুরুল হক বাড়িতে এসে দেখেন, মায়ের দাফন সম্পন্ন হয়ে গেছে। এ নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আক্ষেপ করে বলেন, বাড়িতে রেখে মাকে সেবা যত্ন করেছি। কিন্তু আসার আগেই মায়ের দাফন সম্পন্ন হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে তিনি গ্রামবাসীর কাছে তার ভাইদের বিরুদ্ধে বিচার চান। এ সময় নুরুল হক ও তার অপর ভাই জহিরুল হক একমত পোষণ করেন। পরে মায়ের দাফন নিয়ে হারুন পক্ষে থাকা চার ভাইয়ের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান সাচ্চু পক্ষের দুই ভাই। পরে এই বাকবিতণ্ডা থেকে সংর্ঘষে রূপ নেয়। পরে তা হারুন ও সাচ্চু গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। এক পর্যায়ে তা কয়েক গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে সাচ্চু পক্ষের নাসির উদ্দিন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। এ সময় টেঁটা, তীর, ইট-পাটকেলের আঘাতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বাড়িঘর। খড়ের গাদায় দেওয়া হয়। বিস্ফোরণ ঘটানো হয় কমপক্ষে ৩০টি ককটেল। পুরো গ্রামজুড়ে চালানো হয় তাণ্ডব। এদিকে পরবর্তী হামলার আশঙ্কায় গ্রামের লোকজন বসতবাড়ি থেকে মূল্যবান মালামাল অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, গ্রামে এমন নৈরাজ্য আমরা আর দেখতে চাই না। গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কে এলাকা ছাড়ছেন। তিনি বলেন, পুলিশ এলেও গ্রামের পরিস্থিতি এখনও থমথমে। যেকোনো মুহূর্তে আবারও ভয়াবহ সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারে দুটি পক্ষ। আমরা সাধারণ মানুষ হিসেবে এমন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ আর দেখতে চাই না। এদিকে নিহতের মেয়ে সাবিনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নিহতের স্ত্রী দেলুয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই। প্রয়োজনে বাড়ি বিক্রি করে মামলা চালাবো। যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিনি তাদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি আজহারুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যাওয়ায় সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এই ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য